আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তাঁদের অনেকেই বলেন, আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। আবার তাদের কেউ কেউ বলেন, আইন ও স্বাধীনতা পরস্পরবিরোধী। প্রকৃতপক্ষে আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক বিরোধী নয় বরং ঘনিষ্ঠ । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।
১. আইন স্বাধীনতার রক্ষক : আইন স্বাধীনতার রক্ষক হিসেবে কাজ করে। যেমন- আমাদের বাঁচার স্বাধীনতা রয়েছে । আইন আছে বলেই আমরা সকলে বাঁচার স্বাধীনতা ভোগ করছি । জন লক যথার্থই বলেছেন, যেখানে আইন থাকে না, সেখানে স্বাধীনতা থাকতে পারে না ।
২. আইন স্বাধীনতার অভিভাবক : আইন স্বাধীনতার অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। পিতা-মাতা যেমন অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে নিরাপদে রাখেন, ঠিক তেমনি আইন সর্ব প্রকার বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করে স্বাধীনতাকে রক্ষা করে ।
৩. আইন স্বাধীনতার শর্ত : আইনের নিয়ন্ত্রণ আছে বলে সবাই স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে। উইলোবির মতে, আইনের নিয়ন্ত্রণ আছে বিধায় স্বাধীনতা রক্ষা পায় ।
৪. আইন স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করে : আইন নাগরিকের স্বাধীনতা সম্প্রসারিত করে। সুন্দর, শান্তিময়, সুষ্ঠু জীবন যাপনের জন্য যা প্রয়োজন তা আইনের দ্বারা সৃষ্টি হয়। এসব কাজ করতে গিয়ে যদিও আইন স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু বাস্তবে স্বাধীনতা তাতে সম্প্রসারিত হয়।
সুতরাং বলা যায়, আইন ও স্বাধীনতার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তবে সকল আইন স্বাধীনতাকে সংরক্ষণ করে না। যেমন- জার্মানির হিটলারের আইনের কথা উল্লেখ করা যায়। কারণ, তার আইন মানবতাবিরোধী ছিল । তবে যে আইন জনগণের সম্মতির উপর প্রতিষ্ঠিত, সে আইন স্বাধীনতার রক্ষক, অভিভাবক, শর্ত ও ভিত্তি ।
আরও দেখুন...